সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানায় এক মর্মস্পর্শী ঘটনায় ১৩ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ ও দীর্ঘ ৩৪ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মোফাজ্জল হোসেন ওরফে শাকিল (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার চরকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফুরের ছেলে। বর্তমানে তিনি আশুলিয়ার জামগড়া বটতলা ডিস অফিস সংলগ্ন রাশেদের মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকেন।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া বাঁশতলার ভাড়াবাসা থেকে প্রয়োজনীয় কাজে বের হলে ওই কিশোরীকে অপহরণ করা হয়। দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পরও যখন কিশোরী বাড়ি ফিরে না আসে, তখন তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা আশেপাশের এলাকা এবং সম্ভাব্য সকল স্থানে তাকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে, ১৮ মার্চ রাত ৮টার দিকে কিশোরীর বোন একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামগড়া বটতলা ডিস অফিস সংলগ্ন রাশেদের মালিকানাধীন বাড়ির একটি কক্ষে অভিযুক্তের সঙ্গে ভুক্তভোগীকে দেখতে পায়। এ সময় অভিযুক্ত শাকিল কিশোরীর বোনকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী কিশোরী পুলিশকে জানায়, অভিযুক্ত তাকে কৌশলে অপহরণ করে একটি বাসায় নিয়ে যায় এবং সেখানে আটকে রাখে। এ সময় তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা হয়। শারীরিক সম্পর্ক করতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে মারধর করা হয় এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা তালুকদার ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, উদ্ধারের পর ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বোন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই ঘটনা সমাজে নারী ও শিশু নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। পুলিশের তদন্ত চলছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।