নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে চার তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি সমাজে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, যেখানে প্রেমের সম্পর্ককে ফাঁদ বানিয়ে নারী নির্যাতনের চেষ্টা করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত
গতকাল মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সিংড়া উপজেলার খেজুরতলা গ্রাম থেকে তিনজন এবং বাগাতিপাড়া উপজেলার হাটদল গ্রাম থেকে আরেকজন তরুণকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন:
- মেহেদী হাসান (২০), বাগাতিপাড়া উপজেলার কাকফো পুরাতন পাড়া
- মেহেদি হাসান রনি (২২), উপর হাটদল গ্রাম
- রাজীব হোসেন (২৩), উপর হাটদল গ্রাম
- গোলাম মোস্তফা (২১), সিংড়ার আকপাড়া-শেরকোল গ্রাম
কী ঘটেছিল?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেহেদী হাসান মুঠোফোনে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রায় এক মাস আগে রাতে তিনি তরুণীর বাড়িতে যান। সেখানে হঠাৎ করে মেহেদীর তিন বন্ধু রনি, রাজীব ও গোলাম মোস্তফা ঘরে প্রবেশ করে। তারা মেহেদী ও তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর তারা তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
মেহেদী তরুণীকে বিয়ে করার আশ্বাস দিলেও পরে সেই প্রতিশ্রুতি রাখেননি। অবশেষে, তরুণী গতকাল বাগাতিপাড়া থানায় গিয়ে মেহেদীসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের ব্যবস্থা
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা চলছে, যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
সমাজে বাড়ছে নারী নির্যাতনের ঘটনা
এ ধরনের ঘটনা শুধু একটি অপরাধই নয়, বরং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্রও ফুটে তোলে। প্রযুক্তির অপব্যবহার করে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোই একমাত্র উপায় এই অপরাধ রোধ করার।
কী করা উচিত?
- অভিভাবকদের সচেতনতা: সন্তানদের ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারে নজর রাখা।
- আইনের কঠোর প্রয়োগ: ধর্ষণের মতো অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা।
- সামাজিক আন্দোলন: নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরি করা।
শেষ কথা
এই ঘটনা আমাদের সবার জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা। নারী নির্যাতন ও সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা জরুরি। আশা করা যায়, দোষীদের কঠোর শাস্তি হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে সমাজ আরও সচেতন হবে।
আরও পড়ুন: রামগতিতে নির্মম দলবদ্ধ ধর্ষণ: ন্যায়বিচার কবে পাবে গৃহবধূ?