নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আট মাসের এক শিশুর হাত ও পা ভেঙে দিয়ে পালিয়ে গেছেন তারই মা। পরকীয়া ও দাম্পত্য কলহের জেরে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। শিশুটির বাবা ইতিমধ্যে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের আন্দারমানিক গ্রামের। সেখানে আশরাফুল (৩৩) ও সুরিয়া (২৩) দম্পতির সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে সামির আহমেদের বয়স চার বছর, আর ছোট ছেলে সিজান আহমেদের বয়স মাত্র আট মাস। গত কয়েক মাস ধরে সুরিয়ার আচরণে পরিবর্তন আসে। আশরাফুলের দাবি, তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে দম্পতির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঘটনাটি ঘটে। সেদিন সুরিয়া আট মাসের শিশু সিজানের দুটি হাত ও বাম পা ভেঙে দিয়ে পালিয়ে যান। শিশুটিকে রেখে যান তার নানি-নানার বাড়িতে। এরপর থেকে সিজান আহমেদ প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাঁদছে। শিশুটির বাবা আশরাফুল জানান, তার স্ত্রী প্রায়ই রাতের বেলা বাড়ি থেকে বের হতেন এবং কয়েক ঘণ্টা পর ফিরতেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে সুরিয়া রেগে যেতেন এবং মাঝে মাঝে হাতও তুলতেন।
আশরাফুল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমি সব সময় সন্তানদের কথা ভেবে চুপ থাকতাম। কিন্তু এবার সে আমার শিশু সন্তানের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। এটা কোনো মায়ের কাজ হতে পারে না। আমি ভয় পাচ্ছি, সে একদিন আমাদের সন্তানদের মেরেও ফেলতে পারে। তাই আমি থানায় অভিযোগ করেছি।”
এ ঘটনায় সুরিয়ার পাশাপাশি অভিযুক্ত হয়েছেন তার মা ময়না (৪৫) ও বাবা আবুল সর্দার (৫০)। শিশুটির বাবা আশরাফুল রোববার (১৬ মার্চ) সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারী বলেন, “শিশুটির প্রতি যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ধরনের ঘটনা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়কেই তুলে ধরে। শিশু নির্যাতন ও নারী-পুরুষের দাম্পত্য কলহের কারণে পরিবার ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। আশা করা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততম সময়ে এ ঘটনার তদন্ত শেষ করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনবে।
আরও পড়ুন: খুব বেশি সময় নেই, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে – ড. মুহাম্মাদ ইউনূস