সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আসছে নতুন বিধিমালা। “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫” নামের এই খসড়ায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বর্তমানে প্রচলিত নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯-এ নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটার যে ব্যবস্থা ছিল, তা সম্পূর্ণ বাতিল হতে চলেছে।
কোন কোটাগুলো বাতিল হচ্ছে?
বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় তিনটি কোটায়:
- ৬০% নারী কোটা
- ২০% পোষ্য কোটা
- ২০% পুরুষ কোটা
কিন্তু নতুন বিধিমালায় এই তিনটি কোটা থাকবে না। এর পরিবর্তে মেধার ভিত্তিতে ৯৩% এবং বাকি ৭% কোটা বরাদ্দ থাকবে নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির জন্য।
নতুন নিয়মে কারা সুবিধা পাবেন?
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে মেধাক্রমভিত্তিক। তবে কিছু বিশেষ কোটাও রাখা হয়েছে:
- ৫% কোটা: বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য
- ১% কোটা: ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য
- ১% কোটা: প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্য
বাকি ৯৩% পদ শুধুমাত্র মেধার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে।
কেন এই পরিবর্তন?
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে উচ্চ আদালতের রায় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা। সরকারি চাকরিতে ৯৩% মেধাভিত্তিক নিয়োগ এবং ৭% কোটা রাখার নিয়ম ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও সেই নীতিই অনুসরণ করা হচ্ছে।
সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ
নতুন বিধিমালায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগেরও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে, যেখানে ২০-২৫টি বিদ্যালয়ের জন্য ১ জন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নেওয়া হবে।
- সংগীত শিক্ষক: ২,৫৮৩ জন
- শারীরিক শিক্ষক: ২,৫৮৩ জন
মোট ৫,১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।
কখন চূড়ান্ত হবে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি?
খসড়া বিধিমালা ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এরপর এটি অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও সরকারি কর্ম কমিশনে পর্যালোচনার জন্য যাবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগতে পারে।
বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮,০৪৩টি শূন্য পদ রয়েছে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে এই সংখ্যা ১০,০০০-১২,০০০ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
উপসংহার
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে এই পরিবর্তন মেধাভিত্তিক সমতা নিশ্চিত করবে। নারী ও পোষ্য কোটা বাতিল হলেও বিশেষ কিছু শ্রেণির জন্য কোটা রাখা হয়েছে। এছাড়াও, নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার উন্নয়ন ঘটবে।
আপনি যদি প্রাথমিক শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে এখনই প্রস্তুতি শুরু করুন। কারণ, শীঘ্রই বড় একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসতে পারে!
প্রস্তুতি শুরু করুন আজই, সুযোগ হাতছাড়া করবেন না!
আরও পড়ুন: এসএসসি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি: কিভাবে সর্বোচ্চ নম্বর নিশ্চিত করবে?