নাটোরের বড়াইগ্রামে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাঁকে থানা থেকে অবমুক্ত করে জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “চলন্ত বাসে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনায় সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে অফিসিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে প্রত্যাহারের চিঠি পাঠানো হয়। চিঠি পাওয়ার পর তাঁকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা জানান, ওসিকে ক্লোজ করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নির্দেশনা এসেছে এবং দায়িত্ব হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির বিবরণ
ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাতে, যখন ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তরা ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়। যাত্রীদের ভাষ্যমতে, রাত ১১টায় গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা বাসটি রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে দুষ্কৃতকারীদের কবলে পড়ে। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ডাকাতেরা যাত্রীদের জিম্মি করে মূল্যবান সামগ্রী লুট করে এবং নারী যাত্রীদের হয়রানি করে।
ডাকাতির পর রাত ৩টা ৫২ মিনিটে বাসটি একই স্থানে ফিরে আসে এবং ডাকাত দল নেমে যায়। পরে যাত্রীদের দাবির মুখে বাসচালক গাড়িটি রাজশাহীর উদ্দেশে চালিয়ে নেন। পরদিন মঙ্গলবার সকালে বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে আসা হয়।
অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও আইনি পদক্ষেপ
ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করা হয়। তাঁদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত শুনানি শেষে তাঁদের জামিনের নির্দেশ দেন।
এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং ডাকাত দলের সদস্যদের চিহ্নিত করে শিগগিরই গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দুইজন নিহত, পাঁচজন আটক