নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক মর্মান্তিক ধর্ষণ ঘটনায় স্থানীয় সম্প্রদায় হতবাক। মাত্র ছয় বছর বয়সী যমজ দুই বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে (১৬) আটক করেছে পুলিশ। শিশুদের মা বাদী হয়ে গতকাল বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিবরণ
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ, গত ২৩ ও ২৫ মার্চ দুই দফায় এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা সন্দেহ প্রকাশ করলে শিশুদের মা প্রথমে বিষয়টি গোপন রাখলেও পরবর্তীতে পুলিশকে জানান। প্রাথমিক তদন্তের পর ৩০ মার্চ পুলিশ অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করে। তাকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
আদালত ও ডাক্তারি পরীক্ষা
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া জানান, শিশু দুজনের ডাক্তারি পরীক্ষা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
নোয়াখালী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, “অভিযুক্ত কিশোরকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে কিশোর অপরাধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে, যেখান থেকে দ্রুত সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।”
সমাজের ক্রমাগত উদ্বেগ
এ ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে নয়, সমগ্র সমাজকে নাড়া দেয়। শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ দিন দিন বেড়ে চলেছে, যা রোধে কঠোর আইন ও সামাজিক সচেতনতা জরুরি। শিশুদের সুরক্ষায় পরিবার, স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাদের সমন্বিত ভূমিকা প্রয়োজন।
আইনি প্রক্রিয়া ও প্রতিকার
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই মামলাটি গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে শেষ করা গেলে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার মিলবে।
সচেতনতা ও প্রতিরোধ
- শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।
- কোনো অস্বাভাবিক আচরণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন বা শিশু হেল্পলাইনে (১০৯৮) যোগাযোগ করতে হবে।
- সমাজের সব স্তরে নৈতিক শিক্ষা ও আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
এই ঘটনা আমাদের সবার জন্য একটি ভয়াবহ বার্তা বহন করে আসে। আসুন, শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে আমরা সবাই সচেতন হই এবং অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে শিশু ধর্ষণের চেষ্টা: অভিযুক্ত যুবক আটক