শিশুরা সমাজের সবচেয়ে নিরীহ ও নির্দোষ প্রাণী। তাদের বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে কোনো নরপিশাচ যদি নৃশংসতার সীমা ছাড়ায়, তাহলে তা সমগ্র মানবতার জন্য কলঙ্ক। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের আবারও ভাবিয়ে তুলেছে—কতটা নীচে নামতে পারে মানুষ?
ঘটনার বিবরণ
গত ২০ মার্চ, বৃহস্পতিবার বিকালে কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের তিলছড়া গ্রামে এক অভাবনীয় অপরাধ সংঘটিত হয়। স্থানীয় ১৮ বছর যুবক আকাশ মোল্যা তার প্রতিবেশী ৬ বছরের এক শিশুকে “মাটির খেলনা” দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির পাশের একটি বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে সে নির্মমভাবে শিশুটিকে ধর্ষণ করে।
শিশুটির মা ক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন তার মেয়ে পেটে ব্যথায় কাঁদছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুটি জানায়, আকাশ তাকে খেলনা দেওয়ার কথা বলে বাগানে নিয়ে গিয়ে আঘাত করেছে।
অপরাধীকে রক্ষায় প্রভাবশালীদের ষড়যন্ত্র
ঘটনাটি প্রকাশ পেয়ে স্থানীয়ভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করলে, আশ্চর্যজনকভাবে প্রভাবশালী এক গোষ্ঠী শিশুর পরিবারকে মামলা করতে বাধা দেয়। তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি চাপা দিতে চেয়েছে। কিন্তু ন্যায়বিচারের দাবিতে শিশুর বাবা শরিফুল মোল্যা অবশেষে ২৫ মার্চ, মঙ্গলবার কাশিয়ানী থানায় মামলা দায়ের করেন।
আইনের হস্তক্ষেপ ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউদ্দিন খান মামলাটির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত চলছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।”
শিশু নির্যাতন রোধে আমাদের করণীয়
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: শিশুদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হয়, সে বিষয়ে পরিবার ও সমাজকে সচেতন করতে হবে।
২. কঠোর শাস্তি: শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, শিশুদের নিরাপদ পরিবেশ দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। শুধু আইন নয়, নৈতিকতাও আমাদের অস্ত্র হতে হবে। আশা করি, ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত ন্যায়বিচার পাবে এবং অপরাধী তার কৃতকর্মের জন্য কঠোর শাস্তি ভোগ করবে।
আরও পড়ুন: রামগতিতে নির্মম দলবদ্ধ ধর্ষণ: ন্যায়বিচার কবে পাবে গৃহবধূ?