যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী এলাকায় এক তরুণী ফুল কিনতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রদলের দুই নেতাসহ চার যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গদখালী ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া এলাকার একটি লিচুবাগানে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন— গদখালী ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে ইয়াসির আরাফাত (২২), জাকির হোসেনের ছেলে জাবেদ হোসেন (২৮), শরিফুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন বাপ্পী (২১) এবং উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে আমিনুর রহমান (২০)। এদের মধ্যে আল মামুন বাপ্পী গদখালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এবং ইয়াসির আরাফাত দফতর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী বলেন, “উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তবে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার তরুণী মণিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি বেনাপোল থানা এলাকায় তার খালার বাড়ি থেকে বাসযোগে ফেরার পথে গদখালী বাজারে ফুল কিনতে নামেন। সেখানে ফুল বিক্রেতা আমিনুর রহমানের দোকানে যাওয়ার পর চার যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তারা তাকে ফুলবাগান দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে পটুয়াপাড়া গ্রামের একটি লিচুবাগানে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে তরুণী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করেন। এরপর মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী এবং এএসপি (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, “গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকেই আইনের শাসন নিশ্চিত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ বলেছে, তদন্ত দ্রুত এগিয়ে চলছে এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে শিশু ধর্ষণ: সালিশে মীমাংসার চেষ্টা, পরে মামলা ও গ্রেপ্তার