ঢাকার আদালত শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ৩১টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন। এসব হিসাবে মোট ৩৯৪ কোটি ৬০ লাখ ৭২ হাজার ৮০৫ টাকা জমা রয়েছে। এই আদেশের মাধ্যমে শেখ হাসিনা পরিবারের মোট অবরুদ্ধ টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ১১৮ টাকা।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। দুদকের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম এই আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের ব্যাংক হিসাবের অস্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব হিসাব অবরুদ্ধ করা জরুরি।
এর আগে গত ১১ মার্চ একই আদালত শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছিলেন। ওই হিসাবগুলোতে মোট ৬৫৫ কোটি চার লাখ ৯৯ হাজার ৩১৩ টাকা রয়েছে। এছাড়াও একটি হিসাবে শূন্য দশমিক ৬৮ ডলার রয়েছে বলে দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, একই দিন শেখ হাসিনা, তার ছেলে জয়, মেয়ে পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ও টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকীর নামে থাকা জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। জব্দকৃত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিকের নামে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট, যার দলিল মূল্য ৪৩ লাখ ২৪ হাজার ৯২০ টাকা। এছাড়াও সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে ধানমন্ডিতে ১৬ কাঠা জমিসহ একটি বাড়ি রয়েছে, যার দলিল মূল্য তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা। শেখ রেহানার জব্দকৃত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আট লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকার সাড়ে ৮ শতাংশ জমি, একই জায়গার তিন লাখ টাকা মূল্যের ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ জমি এবং সেগুনবাগিচায় ১৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট। এছাড়াও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকীর নামে গুলশানে থাকা ৬টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আদালতের এই সিদ্ধান্ত দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।