আছিয়ার মৃত্যুর কথা আমার মনে হয় বাংলাদেশের সব মানুষ জেনে গেছে। এই মৃত্যুর খবর মানুষের মনে এক চরম শোকাবহ পরিবেশ তৈরী করেছে। কারন, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। ছোটবোন আছিয়াকে নির্যাতন করা হয়েছে। পাশবিক নির্যাতন। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত পরপারে চলে গেছে। বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো নয়। আছিয়াকে যারা যন্ত্রণা দিয়েছে, জীবনটা কেড়ে নেয়ার জন্য যারা দায়ী তারা এখনও বেঁচে আছে।
শুনেছি, তাদেরকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এখানে রিমান্ডে নিয়ে তাদের কাছ থেকে আর কি তথ্য বের করার মতো আছে? তারা যে ধর্ষক সেটা তো প্রমাণিত। আর যে বিষয়টি প্রমাণিত সেটা নতুন করে আর কি প্রমাণ করার আছে আমার মাথায় ধরে না।
সময় মতো ধর্ষকদের বিচার হয় না বলেই দিনের দিন ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। বাবা কর্তৃক মেয়েও ধর্ষিত হচ্ছে। মেয়েরা যেন কোথাও নিরাপদ নয়। অন্তত কয়েকজন ধর্ষককে যদি প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হতো তাহলে হয়তো নতুন করে কেউ কাউকে ধর্ষণ করার সাহস পেত না।
ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো যেসব পরিবারে ঘটে কেবল তারাই জানে তাদের পরিবারটার ভবিষ্যত অবস্থা কি হয়। এই কথাগুলো যখন লিখছি তখনও উত্তরায় নতুন করে একটি বাচ্চাকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
বর্তমান সরকারের উচিত খুব মনোযোগ সহকারে ধর্ষণের বিষয়গুলো মাথায় নেয়া। ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার করা। বিচার মানেই প্রকাশ্যে ফাঁসি। এছাড়া এ থেকে পরিত্রাণ পাবার আর কোন সুযোগ নাই। শুধু আছিয়া নয়, আরও অনেক আছিয়ার জীবন পূর্বে এভাবে শেষ হয়ে গেছে। এখন টেকনোলোজীর আধুনিকতায় আমরা বিষয়গুলো দ্রুত দেখতে ও শুনতে পাই। কিন্তু আগে অনেক ঘটনাই গ্রাম পর্যন্ত এসে শেষ হয়ে গেছে।
আর কোন বোন এভাবে ধর্ষণ হোক সেটা চাই না। হলেও আর মেনে নেয়া সম্ভব নয়। সরকার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচার করতে ব্যর্থ হয় তাহলে হয়তো জনগণ আইন নিজের হাতে তুলতেও দ্বিধাবোধ করবে না। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এখনই সময়। নয়তো আরও অনেক তাজা প্রাণ ঝরে যেতে পারে।
আমরা এই কান্না আর সহ্য করতে পারবো না। বাংলাদেশকে আগে সোনার বাংলাদেশ বলা হতো। এখন এটা রুপার বাংলাদেশও নাই। এটা হয়েছে ধর্ষকদের বাংলাদেশ। মন চাইলেই ধর্ষণ করছে, যা ইচ্ছা তাই করছে। এসব অমানুষদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নাই। আমার একটাই দাবি, ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হোক। এটা আইন হোক। হয়তো এই নরপশুদের হাত থেকে বাংলাদেশ তবেই রেহাই পাবে।
বোন আছিয়া, তুমি আমাদের মাফ করো। তোমার জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি। কিছু করতে পারবো কিনা সেটাও জানি না। আমরা ধর্ষকদের বিচার করতে পারবো কিনা জানি না। কিন্তু একজন তো আছেন (আল্লাহ তায়ালা) যিনি তোমার জন্য বোন উত্তম ফয়সালা রেখেছেন। ওপারে ভালো থেকো আছিয়া।