ইসলামে, কথায় সংযমকে একটি মৌলিক গুণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সহজ উপায়। কারণ, আমাদের কথা আমাদের চারপাশের মানুষের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই একজন মুমিনের জন্য কী বলা উচিত এবং কী বলা উচিত নয়—সে বিষয়ে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। চলুন শুরু করি।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কথায় সংযমের গুরুত্ব
১. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ:
হাদিসে উল্লেখ আছে, “যে ব্যক্তি তার জিহ্বাকে (অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর কথা বলা থেকে) সংযত রাখতে পারলো, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহিহ তিরমিজি, হাদিস: ২৬১০)
২. পাপ থেকে মুক্তি:
কথায় অসংযমতা বিভিন্ন ধরনের পাপের দিকে ধাবিত করতে পারে, যেমন—গীবত, মিথ্যা বলা, এবং কটূক্তি করা।
৩. মানসিক প্রশান্তি:
কম কথা বলা মনের শান্তি ও প্রশান্তি বয়ে আনে।
৪. সামাজিক সম্প্রীতি:
বাকবিতণ্ডা ও ঝগড়া এড়ানোর মাধ্যমে কথায় সংযম সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে।
যেসব বিষয় মেনে চলতে হবে
✅ গায়রুল্লাহর নামে শপথ: শুধুমাত্র আল্লাহর নামেই শপথ করা উচিত।
✅ অনিশ্চিত কল্যাণ চাওয়া: আল্লাহর কাছে কল্যাণ চাইলে পূর্ণ বিশ্বাস ও দৃঢ়তার সঙ্গে চাইতে হবে।
✅ শারীরিক ত্রুটির জন্য অভিশাপ: কারও শারীরিক ত্রুটির জন্য তাকে অভিশাপ দেওয়া নিষিদ্ধ।
✅ অপরাধ ঢাকতে আল্লাহর নাম ব্যবহার: নিজের অপরাধ ঢাকতে আল্লাহর নাম ব্যবহার করা বেআদবি।
✅ মানুষকে বরকতের উৎস বলা: বরকত কেবল আল্লাহই দান করেন।
✅ আল্লাহর প্রতি অবিচারের অভিযোগ: আল্লাহ কখনো অবিচার করেন না।
✅ তাকদিরের প্রতি আপত্তি: আল্লাহর নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি করা ঈমানের পরিপন্থী।
✅ সময়কে অভিশপ্ত বলা: সময় আল্লাহর নির্ধারণ অনুযায়ী চলে।
✅ সৃষ্টির প্রতি অসম্মান: কোনো শিল্পকর্মকে ‘সৃষ্টি’ বলা আল্লাহর প্রতি অসম্মান।
✅ ধর্মীয় প্রতীকের অপব্যবহার: ধর্মীয় প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।
✅ আল্লাহর ক্ষমা সম্পর্কে নিরঙ্কুশ ধারণা: আল্লাহ সবার প্রতি করুণাময়, তবে তাঁর ক্ষমা ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায়, কথায় সংযম ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। একজন মুমিনের উচিত কথা বলার আগে চিন্তা করা এবং কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় ও উত্তম কথা বলা। এটি তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ, পাপ থেকে মুক্তি এবং মানসিক প্রশান্তি অর্জনে সহায়তা করবে।
মনে রাখতে হবে, ইসলাম একমাত্র ধর্ম যেখানে জীবনের জন্য পরিপূর্ণ জীবনবিধান পাওয়া যায়। তাই আমরা মুসলিমরা অবশ্যই পাপ বর্জন করবো এবং ভালোকে গ্রহণ করবো।
আরও পড়ুন: ইসলাম থেকে মানুষ যেভাবে দূরে সরে যাচ্ছে