কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় এক কিশোরীকে চেতনানাশক মিশ্রিত পানীয় খাইয়ে অর্ধচেতন অবস্থায় রাতভর ধর্ষণের মর্মান্তিক অভিযোগ উঠেছে। মাত্র ১৬ বছর বয়সী এই মাদ্রাসা ছাত্রী দাখিল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, যখন এক তরুণের প্রেমের ফাঁদে পড়ে এই নির্মমতার শিকার হয়।
ঘটনার বিস্তারিত
ওই কিশোরীর বাবা জানান, একই এলাকার ১৮ বছর বয়সী এক যুবক দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রাখছিল। ২৭ মার্চ, পবিত্র শবে কদরের রাতে যুবকটি তার এক বন্ধুকে নিয়ে কিশোরীর বাড়ির পাশে আসে। কিছুক্ষণ কথা বলার পর জোর করে তাকে পাশের একটি মৎস্য খামারে নিয়ে যায়। সেখানে পানির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে খাইয়ে তাকে অচেতন করে ফেলে এবং রাতভর ধর্ষণ করে।
পরদিন ভোরে ফজরের নামাজ শেষে পরিবার মেয়েটিকে ঘরে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। শেষমেশ রাস্তার ধারে অর্ধ-অচেতন অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। ঘটনার কথা জানার পর পরিবার অভিযুক্তের বাড়িতে গেলে তারা প্রথমে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিষয়টি চাপা দিতে চায়। কিন্তু পরে কোনো সমাধান না পেয়ে কিশোরীটি বুড়িচং থানায় মামলা করে।
পরিবারের আকুতি: ন্যায়বিচার চাই
কিশোরীর বাবা বলেন, “প্রেমের নামে আমার মেয়েকে ধোঁকা দিয়ে তার সর্বনাশ করা হয়েছে। সে এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। সামনে তার পরীক্ষা, কিন্তু এই ঘটনার পর সে আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাচ্ছে না। আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই।”
পুলিশের তদন্ত ও অভিযুক্তের পলায়ন
বুড়িচং থানার তদন্ত কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ প্রধান জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকেই পলাতক। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
সমাজের করণীয়
এ ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে নয়, গোটা সমাজকে নাড়া দেয়। নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। পরিবারগুলিকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কেউ প্রেমের নামে অপরাধের ফাঁদ পেতে না পারে।
আমাদের প্রত্যাশা:
এই মামলায় দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে নিরপরাধ কিশোরীকে ন্যায়বিচার দেওয়া হোক। পাশাপাশি, সমাজের সকল স্তরে নারী ও শিশু সুরক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
আরও পড়ুন: বাউফলে শিশু ধর্ষণ: নিষ্ঠুরতার শিকার ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী