মানবতার ডাকে সাড়া: বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থন
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে। বাংলাদেশও এই নিষ্পেষিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে অকৃত্রিম সংহতি নিয়ে। শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক বিশাল সমাবেশে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাতে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছেন।
কী ঘটছে গাজায়?
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণে ইতিমধ্যে হাজারো নিরীহ নারী-শিশু প্রাণ হারিয়েছে। হাসপাতাল, স্কুল ও বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চলছে অব্যাহতভাবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা ও নীরবতায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়।
ঢাকায় সংহতির জোয়ার
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে এই সমাবেশে অংশ নিতে সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভিড় জমাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন এলাকা, টিএসসি ও পার্শ্ববর্তী রাস্তাগুলো পরিণত হয়েছিল এক বিরাট মানবসমুদ্রে।
কেমন ছিল পরিবেশ?
- পতাকা ও ব্যানারে সজ্জিত মিছিল: অংশগ্রহণকারীদের হাতে ফিলিস্তিনের কালো-সাদা-সবুজ পতাকা, বাংলাদেশের পতাকা ও বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।
- স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতা: সমাবেশটি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল রাখতে স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্যানের প্রবেশপথে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
- সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ: ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক—সবাই এই আন্দোলনে শরিক হয়েছেন।
কেন মানুষ এখানে জড়ো হয়েছেন?
১. মানবতার ডাক
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী শাহিনা আলম বলেন, “ফিলিস্তিনে শিশুদের ওপর যে নৃশংসতা চলছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তাদের দুঃখে কষ্ট পাই।”
২. ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব
অনেকেই এটিকে মুসলিম উম্মাহর কর্তব্য হিসেবে দেখছেন। তবে শুধু ধর্মীয় কারণেই নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ সর্বজনীন।
৩. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ
বিশ্ব নেতৃত্বের নীরবতা ও পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে এই সমাবেশ একটি জোরালো বার্তা দিয়েছে।
সমাবেশের মূল বার্তা
- গাজায় যুদ্ধবিরতি চাই
- ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে
- ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা
- জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের হস্তক্ষেপের দাবি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
#MarchForGaza ও #StandWithPalestine হ্যাশট্যাগে বাংলাদেশিরা তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে এই আয়োজন ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
শেষ কথা
ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশা আজ গোটা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সংহতি জানিয়ে আবারও প্রমাণ করেছে, মানবতা কোনো সীমানা চেনে না। এই আন্দোলন শুধু একটি প্রতিবাদ নয়, নিষ্পেষিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক ঐতিহাসিক দলিল।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ক বনাম ওপেনএআই: এআই জগতের আইনি যুদ্ধের নতুন মোড়
আপনারও কি কিছু বলার আছে? নিচে কমেন্টে জানান—ফিলিস্তিনের পাশে আপনার অবস্থান কী?