মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় এক নাতিকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে তারই নানাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পিরতলা গ্রামের হুরমত তলার মাঠে। অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা আটক করে মারধর করার পর পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে আসা এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে পার্কে ঘুরানোর নাম করে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যান তার নানা আসাদুজ্জামান। পরে তিনি তাকে নির্জন মাঠে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। তবে মেয়েটি চতুরতার সঙ্গে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে ঘটনা জানায়।
ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অভিযুক্ত আসাদুজ্জামানকে খুঁজে বের করে মারধর শুরু করে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভিকটিম ও অভিযুক্তের পরিচয়
অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান পিরতলা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। তিনি একই উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামে বসবাস করেন। অন্যদিকে, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি আসাদুজ্জামানের মেয়ে লিজা খাতুনের আপন জার মেয়ে।
লিজা খাতুন জানান, ঈদের ছুটিতে তিনি ও তার জার মেয়ে (ভিকটিম) নানার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। নানা তাকে পার্কে ঘুরাতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাইরে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারেন, তার বাবা মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। তিনি ঘটনাটি সত্য হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
পুলিশের বক্তব্য
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, নাতিকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আসাদুজ্জামানকে গ্রামবাসী আটক করে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তার অপরাধ স্বীকার করেছেন।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভিকটিম ও অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে।
সমাজে নারী ও শিশু নিরাপত্তা
এ ধরনের ঘটনা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে তোলে। শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবার ও সমাজের সচেতনতা জরুরি। পাশাপাশি, দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সতর্কতা ও করণীয়
- শিশুদের অপরিচিত বা আত্মীয়দের সঙ্গে একা কোথাও যেতে দেবেন না।
- সন্তানদের সচেতন করুন, অপ্রত্যাশিত আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শেখান।
- কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলে অবিলম্বে স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশকে জানান।
মন্তব্য:
এ ধরনের জঘন্য অপরাধ সমাজের জন্য কলঙ্ক। আশা করা যায়, দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে আসামিকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পাবনায় কিশোরী ধর্ষণ মামলায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ গ্রেপ্তার