সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে এক মর্মস্পর্শী ঘটনায় স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামকে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত আব্দুল করিমকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে, যা এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার বিবরণ
গত ১ এপ্রিল সকালে ওই কিশোরী মসজিদে কুরআন শিক্ষার জন্য যায়। ক্লাস শেষে অন্য শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর অভিযুক্ত ইমাম তাকে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়। আতঙ্কিত কিশোরী বাড়ি ফিরে পরিবারকে ঘটনাটি জানায়।
পরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ অভিযুক্ত ইমামকে একই দিন রাত সাড়ে নয়টায় মসজিদের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে।
আদালতের রায় ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
রোববার (৭ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া আব্দুল করিমকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। কোর্ট ইন্সপেক্টর হাবিবুল্লাহ সরকার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের এমন নিন্দনীয় কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অনেকেই শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষায় কঠোর আইনি ব্যবস্থা দাবি করেছেন।
পুলিশের বক্তব্য
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, মামলার তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে চলছে এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।
শেষ কথা
ধর্মীয় নেতৃত্বের সঙ্গে জড়িত এমন জঘন্য অপরাধ সমাজে আস্থার সংকট তৈরি করে। আশা করা যায়, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতিকারের উপায়:
- শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেতনতা বৃদ্ধি করুন।
- কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা দেখলে স্থানীয় প্রশাসন বা ১০৯ হেল্পলাইনে রিপোর্ট করুন।
- সমাজে নৈতিক শিক্ষা জোরদার করতে ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
এই ঘটনা আমাদের সবার জন্য একটি বড় শিক্ষা – ধর্মীয় পদ বা সামাজিক মর্যাদা কোনো অপরাধকে আড়াল করার অনুমতি দেয় না। ন্যায়বিচারই কেবল সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: দুই সন্তানের মাকে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ