ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন গাজা উপত্যকার ‘ডি-ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী’ ইসাম দা’আলিস এবং সংগঠনটির আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এই হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকার শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে বিস্তৃত অভিযানের অংশ হিসেবে তারা হামাসের চারজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে টার্গেট করে হামলা চালায়। এই হামলায় ইসাম দা’আলিস ছাড়াও হামাসের বিচার মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আহমেদ আল-খাত্তা, গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান মাহমুদ আবু ওয়াতফা এবং হামাসের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান বাহজাত আবু সুলতান নিহত হয়েছেন।
আইডিএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামোকে দুর্বল করা এবং ইসরাইল ও এর নাগরিকদের জন্য হুমকি কমিয়ে আনা। ইসাম দা’আলিস ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ইসরাইলের হাতে নিহত হামাস নেতা রৌহি মুশতাহার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। তিনি গাজা উপত্যকায় হামাসের শাসন কার্যকর রাখা এবং সংগঠনের বিভিন্ন শাখার মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
এই হামলার পাশাপাশি, ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার ভোরে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া, পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরাইলের এই বিমান হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে এবং বেসামরিক জনগণের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতিমধ্যে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
এই ঘটনায় ফিলিস্তিনি অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে সংঘাতের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ বলছে, হামাসের হুমকি মোকাবিলায় তারা প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। তবে, এই হামলায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়ছে। যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধার এবং সংঘাত নিরসনের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পল্লবীতে নির্মাণাধীন ভবনে নারী সাংবাদিককে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২