পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে দুই সন্তানের জননীকে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার বিস্তারিত
শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১২টায় কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের মধ্য টিয়াখালী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত সোহাগ হাওলাদার (২৭), যিনি ভুক্তভোগী নারীর মামাতো দেবর, তাকে ঘরে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে রাতে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা ব্যর্থ হলে তিনি নারীটিকে মারধর করেন।
ভুক্তভোগী নারী হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থায় জানান, “সোহাগ প্রায় আড়াই বছর ধরে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। প্রথমবার সে আমাকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে এবং পরে সেই ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়ে বারবার আমার ওপর অত্যাচার চালায়।”
স্বামীর প্রতিক্রিয়া
নারীটির স্বামী একজন জেলে, যিনি সাধারণত রাতে মাছ ধরতে নদীতে যান। তিনি জানান, “আমি সন্ধ্যায় মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমার স্ত্রী ফোন করে সাহায্য চাইলে আমি দৌড়ে বাড়ি ফিরি। সোহাগ আমাকে দেখে পালিয়ে যায়। এখন সে আমাদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে যাতে আমরা মামলা না করি।”
পুলিশের তদন্ত
এ ঘটনায় কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ঘটনার রাতেই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছি। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সমাজে নারীর নিরাপত্তা হুমকির মুখে
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে নারী নিরাপত্তার চিত্রকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, যেখানে পারিবারিক ও আত্মীয়তার সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি নারীদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে।
কী করা উচিত?
- আইনের কঠোর প্রয়োগ: ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
- সামাজিক সচেতনতা: পরিবার ও সমাজকে নারী নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
- মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা: ভুক্তভোগীদের জন্য কাউন্সেলিং ও সহায়তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
শেষ কথা
এই ঘটনা আমাদের সকলকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। নারী নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার, প্রশাসন ও সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে। আশা করি, অপরাধী দ্রুত শাস্তি পাবে এবং ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবার ন্যায়বিচার পাবে।