ভোলায় দুই ভয়াবহ ধর্ষণ ঘটনা: সমাজের নীচতা প্রকাশ
ভোলায় সম্প্রতি দুইটি মর্মান্তিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা সমাজের নৈতিক অধঃপতনের চিত্র ফুটে তুলেছে। একদিকে ১৬ বছরের এক দাখিল পরীক্ষার্থী কিশোরী, অন্যদিকে মাত্র ৫ বছরের একটি শিশু—এই দুই নিরীহ প্রাণ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনাগুলো স্থানীয় জনগণকে হতবাক করেছে এবং ন্যায়বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
১. দাখিল পরীক্ষার্থী কিশোরীর ওপর পাশবিক নির্যাতন
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগন ইউনিয়নের খাসমহল বাজার এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ১৬ বছরের এক দাখিল পরীক্ষার্থী প্রকৃতির ডাকে বাইরে গেলে প্রতিবেশী ওমর কাজী (৩৫) তাকে মারধর করে জোরপূর্বক একটি বাগানে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। পরিবারের সদস্যরা ঘটনা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ভোলা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ওমর কাজী একই এলাকার বাসিন্দা এবং বিবাহিত। তার এমন নৃশংসতা সমাজে প্রশ্ন তুলেছে—কীভাবে একজন সন্তানের পিতা এমন পাশবিক কাজে লিপ্ত হতে পারে?
২. পাঁচ বছরের শিশুর ওপর চিপসের প্রলোভনে ধর্ষণ
একই দিনে, ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের শান্তিহাট এলাকায় আরেকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মাত্র ৫ বছরের একটি শিশুকে চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোর (১৪) ধর্ষণ করে। শিশুটির মা অভিযোগ করেন যে, খালেক নামের ওই কিশোর ছাড়াও হাবিব, বাপ্পি ও ফাহিম নামের আরও তিনজন এই কাজে জড়িত ছিল।
শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।
চিকিৎসা ও আইনী পদক্ষেপ
ভোলা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ড. শেখ সুফিয়ান রুস্তম জানান, দুজন ভিকটিমকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
পুলিশ ঘটনাগুলো তদন্ত করছে। ভোলা মডেল থানার ওসি আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ জানিয়েছেন, শিশু ধর্ষণের মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অন্যদিকে, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক বলেছেন, দাখিল পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত চলছে।
সমাজের করণীয়
এ ধরনের ঘটনা শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব নয়, সমাজকেও সচেতন হতে হবে। পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশু ও নারীদের সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
কীভাবে সচেতন হবেন?
- শিশুদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন, তাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করুন।
- প্রতিবেশী বা পরিচিত কারও অস্বাভাবিক আচরণ দেখলে সতর্ক হোন।
- ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার হলে দ্রুত পুলিশ ও আইনী সহায়তা নিন।
শেষ কথা
ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি সমাজের রুগ্ন মানসিকতার প্রকাশ। ভোলার এই ঘটনাগুলো আমাদের সবার জন্য একটি চরম সতর্কবার্তা। আসুন, আমরা সচেতন হই, অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করি।
আরও পড়ুন: আত্মীয়ের হাতে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার তরুণী, ঘাতক গ্রেফতার
#StopRape #JusticeForVictims #ProtectOurChildren