কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মাত্র ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এই নৃশংস ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার অভিযুক্ত আফজাল আলী শিশুটিকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
শিশুটির মা বুধবার সন্ধ্যায় খোকসা থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি চালায়।
অভিযুক্তের গ্রেপ্তার ও জনতার ক্ষোভ
ওসি মঈনুল ইসলাম জানান, বুধবার রাত ১টার দিকে আফজাল আলী ঢাকার উদ্দেশে খোকসা রেলওয়ে স্টেশন থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, এই নিষ্ঠুর ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এলাকাবাসীর দাবি, এমন অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ শিশুদের ওপর এমন পাশবিক অত্যাচার করতে না পারে।
শিশুটির বর্তমান অবস্থা
ধর্ষণের শিকার শিশুটি বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. হোসেন ইমাম জানান, শিশুটি শঙ্কামুক্ত হলেও শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত। তার দ্রুত সুস্থতার জন্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
সমাজে শিশু নির্যাতন বন্ধে করণীয়
এ ধরনের ঘটনা সমাজের জন্য এক অন্ধকার দিক তুলে ধরে। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবার সচেতনতা জরুরি। কিছু পদক্ষেপ নিলে此类 অপরাধ রোধ করা সম্ভব:
- সচেতনতা বৃদ্ধি: অভিভাবকদের শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হতে হবে এবং তাদেরকে strangers-এর সাথে সতর্ক থাকতে শেখাতে হবে।
- দ্রুত আইনি ব্যবস্থা: শিশু নির্যাতনের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত।
- কঠোর শাস্তি: ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
- মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা: নির্যাতনের শিকার শিশুদের পুনর্বাসন ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
শেষ কথা
এই ঘটনা আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে তুলেছে। শিশুদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার, প্রশাসন ও সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে। আশা করি, দোষীর কঠোর শাস্তি হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: যশোরে প্রেমিকাকে চেতনানাশক খাইয়ে ধর্ষণ
বিঃদ্রঃ শিশু নির্যাতন বা কোনো ধরনের সহিংসতা দেখলে অবিলম্বে স্থানীয় প্রশাসন বা ১০৯ নম্বরে কল করুন। শিশুদের সুরক্ষায় আমরা সবাই সচেতন হই।