কুমিল্লার দেবিদ্বারে এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্তম্ভিত। সৎ বাবার বিরুদ্ধে তারই ৭ বছর বয়সী কন্যাসন্তানকে ধর্ষণের ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। এই নৃশংস ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার বিবরণ
শুক্রবার (৪ মার্চ) রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভার বারেরা কাজীবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জামাল হোসেন পেশায় একজন অটোরিক্সা চালক এবং শিশুটির সৎ বাবা। জানা গেছে, শিশুটি তার মাকে ঘটনাটি জানালে মা প্রথমে বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং মেয়েকে ভয়ভীতি দেখান। কিন্তু পরে শিশুটি প্রতিবেশীদের কাছে সবকিছু খুলে বললে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে জামালের বাড়ি ঘেরাও করেন এবং তাকে শাস্তি দাবি করেন। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য
শিশুটির নানা মো. শক্কুর মিয়া জানান, মাত্র দেড় মাস আগে তিনি তার মেয়েকে জামাল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। এটি উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। তিনি বলেন, ঘটনার কথা জানতে পেরে তিনি মেয়ের বাড়িতে গিয়ে নাতনির শরীরে কামড়ের দাগ দেখতে পান।
শিশুর মামা সজীব বলেন, তার ভাগ্নি চান্দিনার খিরাসার গ্রামে তাদের পরিবারের সাথে থাকত। ঈদের কয়েক দিন আগে তার বোন ও জামাল শিশুটিকে তাদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। পরিবার এখন ন্যায়বিচার চাইছে এবং দোষী ব্যক্তির কঠোর শাস্তি দাবি করছে।
পুলিশ ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে স্থানীয়রা আটক করে রেখেছিলেন, পরে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। ভুক্তভোগী শিশুটিকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
সমাজের করণীয়
এ ধরনের জঘন্য অপরাধ সমাজের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দেয়। শিশুদের সুরক্ষা ও নারী নির্যাতন বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। পরিবার ও প্রতিবেশীদের উচিত কোনো ধরনের নির্যাতনের ঘটনায় চুপ না থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো।
শেষ কথা
এই ঘটনা আমাদের সমাজের অন্ধকার দিককে আবারও উন্মোচিত করেছে। শিশুদের প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা রোধে সরকার, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আশা করা যায়, দোষী ব্যক্তি দ্রুত বিচারের মুখোমুখি হবে এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়া হবে।