চট্টগ্রামের চন্দনাইশে এক কল্পনাতীত নিষ্ঠুর ঘটনায় কেঁপে উঠেছে সমাজ। এক ২০ বছর বয়সী কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আরও মর্মান্তিক বিষয় হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তারই আত্মীয়। ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
ঘাতকের পরিচয় ও গ্রেপ্তার
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে কক্সবাজারের রামু থানার রশিদনগর ইউনিয়ন থেকে অভিযুক্ত নাজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নাজিম ভুক্তভোগী তরুণীর নানীর আপন বোনের ছেলে, অর্থাৎ সে ছিল তারই আত্মীয়।
কী ঘটেছিল সেই ভয়াল রাতে?
বুধবার মধ্যরাতের দিকে চন্দনাইশের এক বাড়িতে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। তরুণীটি ঈদের ছুটি কাটাতে তার নানা-নানীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিযুক্ত নাজিমও সেখানে সেদিন রাতেই উঠেছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, রাতের অন্ধকারে যখন মেয়েটি টয়লেটে যায়, তখন নাজিম তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি নানা-নানি দেখে ফেলায় তাদেরও গলায় কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় সে।
পুলিশ সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে টয়লেটের ভেতর থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে। তার মুখে ওড়না গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। আহত নানা-নানীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সমাজের মৌলিক সংকট
এই ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ডই নয়, এটি আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের চরম উদাহরণ। আত্মীয়ের আশ্রয়েই যখন একজন নারী নিরাপত্তাহীন, তখন প্রশ্ন ওঠে—নারীদের সুরক্ষা কতটুকু নিশ্চিত করা সম্ভব? ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনাগুলো প্রতিরোধে কঠোর আইন ও তার প্রয়োগ জরুরি।
পুলিশের তৎপরতা ও বিচারের দাবি
পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। এখন বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে শেষ করা জরুরি, যাতে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং সমাজ ন্যায়বিচার পায়।
শেষ কথা
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সবার জন্য চরম লজ্জার। নারী নিরাপত্তা ও নৈতিক শিক্ষা জোরদার করতে হবে পরিবার ও সমাজের সব স্তরে। পাশাপাশি, আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।
আমরা ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়াই এবং আশা করি, দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেফতার