নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক নবদম্পতির ওপর চালানো হয়েছে পাশবিক নির্যাতন। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হাতে ধর্ষণের হুমকি, মারধর ও অপহরণের শিকার হয়ে এখন জীবননাশের শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি। ভুক্তভোগী দম্পতি মাজহারুল ও মৌমিতা সরেজমিনে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন তাদের ওপর হওয়া অত্যাচারের কাহিনী।
কী ঘটেছিল সেই রাতে?
ভুক্তভোগী দম্পতির বয়ান অনুযায়ী, তারা রাস্তার পাশে বালুর মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এমন সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী মাসুম, রমজান, ওয়াসিম ও শাহজাহানসহ ৭-৮ জন অস্ত্রসহ সেখানে হাজির হয়। তাদের জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে। সেখানে স্বামী মাজহারুলকে পিটুনি দেওয়া হয় এবং তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে স্ত্রী মৌমিতাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়।
এছাড়াও, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শাহ আলমের কাছ থেকে জবরদস্তি করে মিথ্যা বক্তব্য নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সম্মানহানির চেষ্টা করা হয়।
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে দম্পতি
এই ঘটনার পর থেকে দম্পতিটি গভীর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তারা জানান, স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এখনও তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে এবং আইনি ব্যবস্থা নিলে প্রাণনাশের আশঙ্কা প্রকাশ করছে।
মাজহারুল ও মৌমিতা পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। তারা চান, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই জানান, এই সন্ত্রাসী চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করছে। তবে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।
পুলিশের ভূমিকা কী?
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। তবে এখনও কোনো গ্রেফতার করা হয়নি। ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে অনেকেই এগিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন।
সমাধানের উপায় কী?
১. দ্রুত গ্রেফতার: সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. সামাজিক সচেতনতা: স্থানীয় জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে, নীরবতা ভাঙতে হবে।
৩. মিডিয়ার ভূমিকা: গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ঘটনাকে আরও বেশি প্রচার করতে হবে।
৪. আইনি সহায়তা: ভুক্তভোগীদের জন্য বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করতে হবে।
শেষ কথা
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজের নৈতিক অধঃপতনেরই প্রতিচ্ছবি। নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস ও আইনের শাসনহীনতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবেন।
আরও পড়ুন: ভোলায় শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা: ন্যায়বিচার চাই
আপনার মতামত জানান:
এই ঘটনা সম্পর্কে আপনার কী মতামত? নারী নির্যাতন ও সন্ত্রাসবাদ রোধে আমরা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারি? কমেন্টে শেয়ার করুন।
#নারীনির্যাতন #সোনারগাঁ #সন্ত্রাসবাদ #আইনেরশাসন #নারীরসুরক্ষা