মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এক গৃহবধূকে চা বাগানের নির্জন টিলায় নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পাশবিক ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয়রা হতবাক। মঙ্গলবার রাতের এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখনও পালিয়ে থাকা অপর আসামিকে ধরতে তল্লাশি চলছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
ধর্ষণের শিকার হওয়া গৃহবধূ (২৫) কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার স্বামী ঢাকায় থাকেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি ঢাকায় স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য কমলগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে আসেন। গাড়িটি রাত সাড়ে ১০টায় ছাড়বে জানতে পেরে তিনি বাড়ি ফেরার জন্য একটি অটোরিকশা ভাড়া নেন।
কিন্তু এই অটোরিকশাই হয়ে ওঠে তার জন্য অভিশাপ। চালক রনি মিয়া (৩২) ও তার সহযোগী পাভেল তাকে মূল সড়ক দিয়ে না নিয়ে চা বাগানের ভিতর দিয়ে একটি নির্জন টিলার দিকে নিয়ে যায়। সেখানে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রথমে রনি, পরে পাভেল তাকে বর্বরভাবে ধর্ষণ করে।
পুলিশের তৎপরতা ও গ্রেফতার
ধর্ষণের পর অপরাধীরা ভুক্তভোগীকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেয়। পরে তিনি কমলগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং বুধবার দুপুরে রনি মিয়াকে গ্রেফতার করে। রনি শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী ঈদগাঁটিলার বাসিন্দা।
কমলগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে একজনকে গ্রেফতার করেছি। অপর আসামিকে আটক করতে অভিযান চলছে।”
সমাজে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নে উদ্বেগ
এই ঘটনা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চা বাগানের নির্জন এলাকায় নারীদের জন্য নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন, রাতের বেলা গণপরিবহনে নারীরা কতটা নিরাপদ?
নিরাপদ সমাজ গঠনে করণীয়
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: নারীদের নিরাপদ যাতায়াত নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
২. পুলিশি টহল: চা বাগান ও নির্জন এলাকায় রাতে পুলিশি টহল বাড়ানো প্রয়োজন।
৩. দ্রুত বিচার: ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
শেষ কথা
ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি সমাজের রুগ্ন মানসিকতারই প্রতিচ্ছবি। এই ঘটনার তদন্ত দ্রুত শেষ করে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও সমাজের সকল স্তরে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন: দুমকীতে বৃদ্ধা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড: নৃশংসতার নয়া মাত্রা
#নারীর_নিরাপত্তা #ধর্ষণের_বিচার #মৌলভীবাজার