সম্প্রতি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে এক মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা দেশ স্তম্ভিত। মাত্র ১১ বছর বয়সী মেধাবী ছাত্রী জান্নাতি বেগমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর খুনি তার মুখে মাটি ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এই নৃশংসতার বিচার চাইছে সমাজের প্রতিটি বিবেকবান মানুষ।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় কালীগঞ্জের চর ভোটমারী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। জান্নাতি বেগম স্থানীয় ভোটমারী এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে না থাকার সুযোগে প্রতিবেশী বেলাল হোসেন (২৪) জান্নাতির বাড়িতে প্রবেশ করে।
কী ঘটেছিল সেই ভয়াল সন্ধ্যায়?
বেলাল জান্নাতিকে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
জান্নাতি প্রতিরোধ করায় সে তার মুখ চেপে ধরে এবং পার্শ্ববর্তী ভুট্টাখেতে টেনে নিয়ে যায়।
সেখানে ধর্ষণের চেষ্টা আবারও ব্যর্থ হয়।
এ সময় জান্নাতির বাবা-মা বাড়ি ফিরে তাকে খুঁজতে থাকেন।
চিৎকার শুনে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে গেলে বেলাল আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
শেষ মুহূর্তে জান্নাতিকে চিরতরে চুপ করাতে সে তার মুখে কাদামাটি ঢুকিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পুলিশের তদন্ত ও গ্রেপ্তার
ঘটনার পর জান্নাতির বাবা ফজলুল হক পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। কালীগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে পরদিনই বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। রিমান্ডে নেওয়ার পর সে হত্যার কথা স্বীকার করে। বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
সমাজের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। জান্নাতির ন্যায়বিচারের দাবিতে লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ হচ্ছে।
কী দাবি করছে মানুষ?
খুনি বেলাল হোসেনের দ্রুত বিচার।
মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা।
শিশু নির্যাতন ও নারী সহিংসতা বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ।
শিশু নিরাপত্তা: আমাদের করণীয়
জান্নাতির মতো অসহায় শিশুরা যেন আর কোনো দিন এমন নিষ্ঠুরতার শিকার না হয়, সে জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে।
কীভাবে আমরা সচেতন হব?
শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো।
প্রতিবেশী বা পরিচিতদের সন্দেহজনক আচরণে সতর্ক থাকা।
শিশুদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা, যাতে তারা বিপদে সাহায্য চাইতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করা।
শেষ কথা
জান্নাতির মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের Tragedies নয়, এটি আমাদের সমাজের জন্য এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই নৃশংসতার বিচার যেন নিশ্চিত হয়, তা দেখার দায়িত্ব আমাদের সবার। শিশুদের নিরাপদ পরিবেশ দেওয়ার অঙ্গীকারই হবে জান্নাতির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় কিশোরী ধর্ষণ: প্রেমের নামে নারকীয় অপরাধ, গ্রেপ্তার ৩
#JusticeForJannati
#StopChildAbuse
মন্তব্য করুন: আপনার কী মনে হয়? শিশু নিরাপত্তা বাড়াতে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি? নিচে কমেন্টে শেয়ার করুন।